ছয় ফুটের বেশি লম্বা, আপনাকে স্বাগতম! যার ছয় ফুটের কম তারাও দেখুন । সমস্যা নাই । খেলাধুলা মানুষের শরীর মন দুটোই ভাল রাখে । অনেক খেলার মধ্যে আমাদের দেশে বাস্কেটবল খেলা জনপ্রিয়তার সারিতে অন্যতম । বাস্কেটবল খেলার জন্য দেখার জন্য উপভোগ করার জন্য জানতে হবে এর বিস্তারিত নিয়মকানুন।
বাস্কেটবলঃ
আমাদের দেশে ছয় ফুটের কাউকে মজা করে ‘লম্বু’ কতজনেই বলে! এই ‘লম্বু’ অর্থাৎ ছয় ফুটের মানুষগুলোও কিন্তু বাস্কেটবল কোর্টের জন্য ছোট। হাঃ হাঃ হাঃ। ন্যাশনাল বাস্কেটবল অ্যাসোসিয়েশনের(এনবিএ) জরিপে দেখা গেছে, এই লিগের খেলোয়াড়দের গড় উচ্চতা রেকর্ড ছয় ফুট সাত ইঞ্চি। গড় ওজনও যে কারণে ২২২ পাউন্ড। “স্টার” খ্যাত ম্যানুয়েট বোল আর জর্জ মুরেসানের উচ্চতা রেকর্ড সাত ফুট সাত ইঞ্চি। এনবিএ-র ইতিহাসে এ দুজনই সবচেয়ে লম্বা খেলোয়াড়।
আন্তর্জাতিক অন্যান্য দলের খেলোয়াড়দের গড় উচ্চতাও ছয় ফুট তিন ইঞ্চি। মেয়েদের ক্ষেত্রে এর গড় পাঁচ ফুট সাত ইঞ্চি। তবে খাটোরা বাস্কেটবল খেলেন না, তা ভাবেন না যেন। এনবিএতেই খেলতেন পাঁচ ফুট তিন ইঞ্চির “মাগসি বোগাস”। যুক্তরাষ্ট্র জাতীয় দলের হয়ে ১৯৮৬ ওয়ার্ল্ড চ্যাম্পিয়নশিপে সোনাও জিতেছিলেন তিনি। তবে ডিফেন্সে উঁচু বলে দুর্বল বলে খাটোরা সুবিধা করতে পারেন না বাস্কেটবলে।
ইতিহাসঃ
খেলাটার আবিস্কারক ড. জেমস নাইস্মিথ। কানাডায় জন্ম নেওয়া নাইস্মিথ স্কুল জীবনে নিজের রুমে খেলতেন ‘ডাক অন এ রক’। যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াইএমসিএ-তে যোগ দেওয়ার পর ছাত্রদের ফিটনেস বাড়ানোর জন্য ১৮৯১ সালে ‘ডাক অন এ রক’-এর আদলে আবিষ্কার করেন বল ঝুড়িতে ফেলার খেলা বাস্কেটবল। ১০ ফুট উঁচু ফলের ঝুড়িতে প্রথম ম্যাচ খেলা হয়েছিল ফুটবল দিয়ে। খেলাটা জনপ্রিয় হয়ে গেলে নাইস্মিথ প্রণয়ন করেন ১৩টি আইন। অধিকাংশ আইনই এখনো রয়ে গেছে। ১৯০৬ সালে ফলের ঝুড়ির পরিবর্তে আসে লোহা আর বোর্ডের তৈরি ঝুড়ি। শুরুতে ৯ জন খেললেও ১৮৯৭-৯৮ মৌসুম থেকে বাস্কেটবল হয়ে যায় পাঁচজনের খেলা। ১৮৯৮ থেকে পাঁচ বছর হয়েছিল ন্যাশনাল বাস্কেটবল লিগ। ১৯২০ সালে যুক্তরাষ্ট্রে বাস্কেটবল ক্লাবের সংখ্যা ১০০ ছাড়িয়ে যায়। উত্তেজনা দেখা দিত বছর শেষে খেলোয়াড়দের দলবদল নিয়েও। যুক্তরাষ্ট্রের গণ্ডি ছাড়িয়ে খেলাটা ছড়িয়ে পড়ে সোভিয়েত ইউনিয়ন (বর্তমান রাশিয়া), যুগোস্লাভিয়া (সার্বিয়া), ইংল্যান্ডেও। ১৯৩৪ সালে প্রথমবারের মতো নিউইয়র্কের মেডিসন স্কয়ারে অনুষ্ঠিত হয় কলেজ চ্যাম্পিয়নশিপ। ১৯৫০ সালের পর থেকে কলেজে ব্যাপক জনপ্রিয় হয়ে ওঠে বাস্কেটবল।
টুর্নামেন্টঃ
দুই বছর পরপর অনুষ্ঠিত হয় আমেরিকান দলগুলোর টুর্নামেন্ট ফিবা আমেরিকাস চ্যাম্পিয়নশিপ। এটা আবার ওই অঞ্চলের বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপ ও অলিম্পিক বাছাই হিসেবেও পরিচিত। চার বছর পরপর অনুষ্ঠিত হয় বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপ। বিশ্বকাপ শুরু হয়েছে ১৯৫০ থেকে। গতবছরের শেষ হিসাবে সর্বোচ্চ তিন বারের চ্যাম্পিয়ন যুক্তরাষ্ট্র, সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়ন ও যুগোস্লাভিয়া। ব্রাজিল ও সার্বিয়া চ্যাম্পিয়ন হয়েছে দু’বার করে। অলিম্পিকে বাস্কেটবলের অন্তর্ভুক্তি ১৯৩৮-এ। যুক্তরাষ্ট্র এ পর্যন্ত জিতেছে রেকর্ড ১৩টি সোনা। ক্লাব পর্যায়ে সবচেয়ে মর্যাদার চ্যাম্পিয়নশিপ এনবিএ। সেখানে যুক্তরাষ্ট্রের ২৯টি ক্লাবের সঙ্গে সুযোগ পায় কিউবার একটি দল। এনবিএ-তে সর্বোচ্চ ১৭ বারের চ্যাম্পিয়ন “বোস্টন সেল্টিকস”। বাস্কেটবলের অভিভাবক সংস্থা ইন্টারন্যাশনাল বাস্কেটবল ফেডারেশনের (ফিবা) জন্ম ১৯৩২ সালের ১৮ জুন। বর্তমানে ফিবার সদস্য দেশ ২১৩টি।
২০০৯-এতিনটি নতুন চ্যাম্পিয়নশিপের ঘোষণা দেয় ফিবা। এর দুটি ছেলে ও মেয়েদের ১২ দলের অনূর্ধ্ব-১৭ বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপ।
যেভাবে খেলতে হয়ঃ
খেলা হয় পাঁচজনের দল নিয়ে। অর্থাৎ কোনো দলে পাঁচজন একই সঙ্গে খেলেন রক্ষণ এবং আক্রমণভাগে। নিশ্চয়ই বুঝতে পারছেন বাস্কেটবল খেলাটা কতটা কষ্টসাধ্য। বদলি হিসেবে খেলানো যাবে বেঞ্চের সাতজনের সবাইকেই।
আন্তর্জাতিক ও এনবিএ-র ম্যাচ হয় চার অর্ধে। প্রতি অর্ধের সময় ১০ মিনিট (এনবিএতে ১২মিনিট)।
কলেজ চ্যাম্পিয়নশিপে দুই অর্ধে খেলা হয়। এক্ষেত্রে প্রতি অর্ধ ২০ মিনিট করে। বিরতির সময়সীমা ১৫ মিনিট। ম্যাচ চলার সময় বেশ কয়েকবার ‘টাইম আউট’ অর্থাৎ সাময়িক বিরতি নিতে পারবেন কোচ। ড্রিবল করে সতীর্থকে পাস দিয়ে খেলোয়াড়দের এগিয়ে যেতে হয় বিপক্ষের সীমানায়। ড্রিবল বন্ধ করলে পাস দিতে হবে এবং দুই হাতে ড্রিবল করা যাবে না। বল এক হাতে ধরেও রাখা যাবে না।
প্রতিপক্ষ খেলোয়াড়কে ধাক্কা দেয়া, জড়িয়ে, স্পর্শ করে বা জার্সি টেনে আটকালে ‘ফ্রি থ্রো’ নির্দেশ হবে। ফাউলের রকমভেদে দেওয়া হয় এক বা দুটি ফ্রি থ্রো। পাঁচটির বেশি ফাউল করলে ছেড়ে যেতে হবে কোর্ট।
দলীয় আটটি ফাউল হলে আবার ফ্রি থ্রো।
ফ্রি থ্রো নিতে হয় বাস্কেট থেকে ১৫ ফুট দূরের লাইন থেকে।
পয়েন্ট গণনাঃ
ফ্রি থ্রোঃ ১,
তিন মিটারের ভেতর থেকেঃ ২,
আর এরও বাইরে থেকে করলে পয়েন্ট হবে ৩।
ম্যাচে বেশি পয়েন্ট পাওয়া দলই জিতবে।
বল ও কোর্টঃ
বাস্কেটবলের কোর্টের আয়তন দৈর্ঘ্যে ২৮ ও প্রস্থে ১৫ মিটার।
খেলাটা ইনডোরে হয় বলে ছাদের উচ্চতা হতে হবে অন্তত ৭ মিটার। শক্ত কাঠের ব্যাকবোর্ড ৩ সেমি. পুরু এবং আনুভূমিকভাবে ১.৮০ মিটার ও খাড়াভাবে ১.২০ মিটার। বাস্কেটের ভেতরের ব্যাস ৪৫ সেন্টিমিটার। রিংয়ের রডটি ২০ সেন্টিমিটার মোটা হয়। রিংটি ব্যাকবোর্ডের সঙ্গে ৩.০৫ মিটার উঁচুতে আটকানো থাকে। অর্থাৎ বাস্কেটটি থাকে কোর্ট থেকে ৩.০৫ মিটার (১০ ফুট) উঁচুতে।
৩ পয়েন্ট লাইন বাস্কেটের মধ্যবিন্দু থেকে ২০.৫ ফুট দূরে থাকে। গত বছরের অক্টোবর থেকে এই দূরত্ব বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২২.১৫ ফুট। তবে নিয়ে বিতর্ক থাকলেও আমি বিতর্ক করবো না।
ফিবার সঙ্গে অবশ্য এনবিএ-র কোর্টের পার্থক্য আছে। পার্থক্য আছে ছেলে ও মেয়েদের কোর্টেও। একসময় খেলা হতো ফুটবল দিয়ে। এখন খেলা হয় কমলা ও বাদামি রঙের বাস্কেটবলে।
বাইরের আবরণ চামড়া কিংবা নাইলন সুতার। বলের পরিধি ৭৪.৯ থেকে ৭৬.২ সেমি.। ওজন ৫৬৭ থেকে ৬২৪ গ্রাম। মেয়েদের বল ছেলেদের বলের তুলনায় হাল্কা।
সময়ঃ
বোনাস স্কোর বাড়াতে বাস্কেটবল খেলায়ও সময় বেঁধে দেওয়া। বিপক্ষের অর্ধে বল নিয়ে যেতে হবে আট সেকেন্ডের মধ্যে। নিজেদের অর্ধে ব্যাকপাস দেওয়া যাবে না। নিজেদের অর্ধ থেকে প্রতিপক্ষের বাস্কেটে গোলের জন্য শট নিতে হবে ৩০ সেকেন্ডের মধ্যে (এনবিএতে ২৪ সেকেন্ড)। এর মধ্যে বলের দখল হারালে ৩০ সেকেন্ডের নিয়ম প্রযোজ্য প্রতিপক্ষের জন্য। আক্রমণের মূল হচ্ছে পাসিং, বল হ্যান্ডলিং, শ্যুটিং এবং রিবাউন্ডিং। ডিফেন্সের বেলায় গার্ডিং, পজিশনিং আর ব্লকিং। পাসিংএর প্রকারভেদঃ বুক বরাবর বাড়ানো পাসের নাম চেস্ট পাস।
ডিফেন্ডারের মাথার ওপর দিয়ে বাড়ানো পাস ‘ওভারহেড’।
রিবাউন্ডের পরের পাসের নাম ‘আউটলেট’।
দলীয় সমঝোতা থাকলে অনেক সময় সতীর্থ খেলোয়াড় কোথায় আছে তা না দেখেও পাস বাড়ানো যায়। এর নাম ‘নো লুক পাস’।
ড্রিবলিংয়ের সময় বল যতটা সম্ভব নিচে রাখার চেষ্টা করেন খেলোয়াড়রা। পিঠ পেছনে রেখে পায়ের ফাঁকে ড্রিবল করার নাম “ক্রসওভার”। এতে আক্রমণভাগের খেলোয়াড়কে আটকানো প্রতিপক্ষের জন্য কঠিন হয়ে পড়ে।
আশা করি এই পোস্ট বাস্কেটবল খেলায় আগ্রহী এবং এই খেলার শুভাকাঙ্খি ও দর্শকের কাছে ভাল লাগবে। এবং বাস্কেটবল খেলার প্রতি যারা আগ্রহী নন তারাও আগ্রহী হবেন বলে মনে করি।
*পোস্টের কয়েকটা লাইন সংগ্রহ করা হয়েছে।
*বরাবরের মত এই টিউনও মোবাইল থেকে লেখা ও প্রকাশ করা হয়েছে।
বাস্কেটবল খেলার চেয়ে দেখে মজা পাই আমি ……. :) :)
খেলার নিয়মগুলো জানা থাকলে ভালো না লাগা খেলাগুলোও ভাল লাগে। তাই দেখতে থাকুন।
অনেক সুন্দর লিখেছেন।
ধন্যবাদ ভাই
সঙ্গত কারনে আপনাকে +++ দিতেই হচ্ছে । আসলে এমন বিসদ পোস্ট পেলে আমরা কিছু শিখতে পারব । কিছু টাকা আয় এর পোস্ট দেখে রাগ করে পেজ থেকে পালিয়ে যাবার মত অবস্থা । হাহাহা
সহমত………..
নয়ন ভাই ধন্যবাদ সহমত হবার জন্য ।
অনুগ্রহ করে পালিয়ে যাবেন না। প্লিজ
আমি যাবনা………… যাবনা……….. যাবনা রে………..(পরের টুকু ভুলে গেছি…)
আরেকটু PUSH করুন। হয়েই যাবে।
হয় না,.,.,,
আরেকটু…..,
পাইছি ভাই ……………………ইত্যাদি.:)
হা হা হা …. হি হি হি …. লল . :D :D :D
এহেম এহেম!!! ফুসকাওয়ালী দুই জন!!! সাব্বাশ মিয়া
হায় হায়…………….এখন কি হবে???????????????
কার কাছ থেকে ফুসকা কিনব?????
আপনার ফটোসপ বন্ধ করলেন কেন????
অনির্বাচিত ফুচকা ওয়ালী ও ফুচকা ওয়ালী ফুচকার অভাব হবেনা । বাস্কেট বলের মাঠে । হাহাহা
আমার ফুল প্লেট ….আগেই অর্ডার দিলাম…(পরে যদি না পাই…..)
আমার জন্যও একথালা রাখবেন কিন্তু.,…….
লাইনে এ থাকেন ভাই……….পাবেন…আশা করি….
শাব্বাস
জটিল পোষ্ট। আসলেই পারভেজ ভাই আপনি চরম লেখেন। চালিয়ে যান। সুন্দর হচ্ছে আপনার পোষ্ট। প্রয়োজন অনুসারে সকল ছবিই ঠিক আছে।
আর আমি খেলতে গেলাম। আপনারা সবাই আমার সাথে থাকিয়েন
পারভেজ ভাই এর কম্পিউটার থাকলে না জানি কি করত???????????????
থাকলে আর কি?
প্রথমে স্টার্ট করতাম ।।।
হা হা হা
(এখন ভাবতেছি ডিজিটাল টিউনার না থাকলে কি হত?)
অনির্বাচিত ফুচকা ওয়ালী নতুন টি যে নাকি ?
উঁনার নিকের উপর ক্লিক করে তাঁর প্রোফাইল ঘুরে আসুন , তাহলেই টের পাবেন
কি আর হত কিছু একটা নিশ্চয় হত………:(
কিছু একটা হবে সেটা কি আপনার বলে দিতে হবে?(ধমক দিয়ে)
হাহাহাহাহা হুহুহুহুহুহ………………….
হাহাহাহাহা হুহুহুহুহু(হাসি না কান্না)?
ভাই ধমক দিলে কি কেও হাসে???????
আমি খেলুম না……..(রাগ করছি.)
তাই বলেন। কিন্তু আপনার হাঁটু যেভাবে কাঁপছে তাতে মনে হচ্ছে ভয় পেয়েছেন!
বাস্কেট তা বেসি ওপরে তো …………লাফাইতে লাফাইতে পা বেথা হয়ে গেছে…………
ও । আমি ভাবলাম ভয়ে….,.
আমি ভাই ডিম দেয়া মুরগি ছাড়া আর কিছু ভয় পাই না……….হাহাহা…….আজব না????
ভুল । সবই ভুল । আপনি এত্তটুকুও ভয় পাননি । স্বীকার করছি । আমার ধারণা ভুল ছিল ।
আপনি ভয় পাননি এটাই ঠিক । এটাই সত্য ।
(কথার প্যাঁচ বুঝিনা মনে করেছেন)?
কৃতজ্ঝতা স্বীকার ।
এই টিউন প্রকাশের নেপথ্যে ডিজিটাল টিউনার এর বিশেষ ভূমিকা রয়েছে।
খেলা টা আমার অনেক ভালো লাগে………..যদিও খেলি নাই কোনো দিন………..
দেখি আপনার সাথে শিখতে পারি কিনা…………ধন্য+++++++++++++
ধন্য নয়ন ভাই । চালিয়ে যান
আপনাকেও অভি নন্দন.
এটা খুবই সুন্দর পোস্ট ………..ধন্যবাদ ……………….
ধন্যবাদ আপনাকে
আরে খাইছে, চরম একটা টিউন, অনেক দিন পর মজা করে একটা ভালো টিউন পড়লাম :)
মিছা কথা ।
হি হি হি …. পুরা চাপা ;) ;)
কোনটা? আমারটা নাকি রাসেল ভাইয়েরটা?
চালিয়ে যান, সাথে আছি :)
সাথেই থাকুন । ধন্যবাদ