
আইনি প্রক্রিয়া না মেনে নিজেদের ইচ্ছামাফিক দেশের সর্বত্র জুনিয়র হরলিক্স বিক্রি করছে গ্ল্যাক্সোস্মিথক্লাইন বাংলাদেশ। জার ও কৌটোজাত এই পণ্যটি দোকানে দোকানে হরদম বিক্রি হচ্ছে ২০১৩ সালের শিশুখাদ্য বিপণন নিয়ন্ত্রণ আইনের একাধিক ধারা লঙ্ঘন করে।
শিশুখাদ্যের প্যাকেট কিংবা জারের মোড়কে ‘গুরুত্বপূর্ণ্য তথ্যাদি’ শিরোনামের সঙ্গে সুস্পষ্ট, সহজে দৃশ্যমান, পাঠযোগ্য, বোধগম্য, সহজবোধ্য বাংলায় ও উজ্জ্বল রংয়ে মুদ্রিত থাকবে। আইনের এই ধারাটির সুষ্পষ্ট লঙ্ঘন করছে হরলিক্স।
এছাড়াও “মাতৃদুগ্ধ বিকল্প, শিশুখাদ্য শিশুর পুষ্টির মূল উৎস নহে” অথবা “বাণিজ্যিকভাবে প্রস্তুতকৃত শিশুর বাড়তি খাদ্য শিশুর পুষ্টির মূল উৎস নহে” এসব কথা কৌটা বা জারের গায়ে লেখা থাকার কথা থাকলেও তা বাস্তবায়ন করেনি গ্ল্যাক্সোস্মিথক্লাইন।
২০১৩ সালের আগস্টে “মাতৃদুগ্ধ বিকল্প, শিশুখাদ্য, বাণিজ্যিকভাবে প্রস্তুতকৃত শিশুর বাড়তি খাদ্য ও উহা ব্যবহারের সরঞ্জামাদি (বিপণন নিয়ন্ত্রণ) আইনটি” অনুমোদন করে মন্ত্রিসভা।
আইনে ৬ মাস থেকে ৫ বছরের শিশুদের জন্য তৈরি বিকল্প খাদ্য বিপণনে নিয়ন্ত্রণের লক্ষ্যে এসব ধারার উল্লেখ রয়েছে।
আইনের ৬ (১) ধারার ব্যাখ্যা অনুযায়ী, শিশু খাদ্যের প্যাকেট কিংবা জারের মোড়কে ‘গুরুত্বপূর্ণ্য তথ্যাদি’ শিরোনামের সঙ্গে সুস্পষ্ট, সহজে দৃশ্যমান, পাঠযোগ্য, বোধগম্য, সহজবোধ্য বাংলায় ও উজ্জ্বল রংয়ে মুদ্রিত থাকবে।
আইন অনুমোদনের ৮ মাস পরও নিজেদের প্যাকেট পরিবর্তন না করে ইংরেজিতে এসব তথ্য লেখা আছে স্ট্রবেরি ফ্লেভারের জুনিয়র হরলিক্সের জারে।
মে মাসের ১৯ তারিখে মিনাবাজার থেকে কেনা (আইএনভি/ ৯১০০৭৪/ পিওএস৩২০৯১২/ ব্যাচ নং. 0913U1.6) ৪০০ গ্রামের (স্ট্রবেরি ফ্লেভার) জুনিয়র হরলিক্সের জারটিতে উৎপাদনের মেয়াদ, মূল্য ও কারখানার ঠিকানা ছাড়া বাংলায় মুদ্রিত কোন লেখা পাওয়া যায়নি।
একই আইনের ৬ এর ১ (গ) ধারায় কৌটার গায়ে, “মাতৃদুগ্ধ বিকল্প, শিশু খাদ্য শিশুর পুষ্টির মুল উৎস নহে” অথবা “বাণিজ্যিকভাবে প্রস্তুতকৃত শিশুর বাড়তি খাদ্য শিশুর পুষ্টির মূল উৎস নহে” কথাটি মুদ্রণ করার কথা উল্লেখ আছে। তবে জারের কোথাও বাংলা কিংবা ইংরেজি ভাষায় বাক্যটি মুদ্রিত করা হয়নি।
আইনের ১২ (১) ও ১৩ ধারা অনুযায়ী, কোনো ব্যক্তি এই আইন লঙ্ঘন করলে তাকে তিন বছরের কারাদণ্ড বা পাঁচ লাখ টাকা অর্থদন্ড অথবা উভয়ই দণ্ডে দণ্ডিত এবং অপরাধ পুনঃ সংঘটনের জন্য দণ্ড দিগুণ হতে পারে।
আইনের ৬ এর ২ (১-ক) ধারায়, মোড়কের গায়ে কোনো শিশু বা শিশুর মা বা উভয়ের বা অন্য কোনোরূপ ছবি না থাকার কথা থাকতে পারবে না বলে উল্লেখ থাকলেও জুনিয়র হরলিক্সের জারের উপরে ডান পাশে মা ও শিশুর হাসিমুখের ছবি মুদ্রিত করেছে গ্ল্যাক্সোস্মিথক্লাইন।
‘কৌটার মোড়ক দেখে যেন না বোঝা যায় যে এটি শিশুখাদ্য, তাই মোড়কে চিত্রলেখ কিংবা কার্টুনচিত্র ব্যবহার করা যাবে না।’ আইনের ৬ এর ২ (১-খ) ধারায় এমনটি লেখা থাকলেও জুনিয়র হরলিক্সের কৌটায় সম্মুখে মুদ্রিত আছে হাস্যজ্জল একটি হাতি শাবকের ছবি।
আইন লঙ্ঘন করে শিশু পণ্য বাজারজাত করা প্রসঙ্গে জানতে চাইলে গ্ল্যাক্সোস্মিথক্লাইন বাংলাদেশের কমিউনিকেশন ম্যানেজার রুমানা আহমেদ এব্যাপারে মোবাইল ফোনে কথা বলতে অস্বীকৃতি জানান এবং প্রশ্ন থাকলে ই-মেইলে লিখে পাঠাতে বলেন।
পরে ২৫ মে, ২০১৪ তারিখে এসব বিষয়ে গ্ল্যাক্সোস্মিথক্লাইন বাংলাদেশের অবস্থান জানতে চেয়ে একটি ই-মেইল করা হয়। তাৎক্ষণিকভাবে ফিরতি ইমেইলে শিগরিরই জবাব দেয়া হবে বলে জানানো হলেও ৫ জুন পর্যন্ত কোনো সদুত্তর পাওয়া যায়নি।
আইনের ১৪ (১) ধারা অনুযায়ী কোনো কোম্পানি এধরণের অপরাধ করলে কোম্পানির পরিচালক, ম্যানেজার, সচিব, অংশীদার, কর্মকর্তা এবং কর্মচারী উক্ত অপরাধ সংঘটন করেছেন বলে গণ্য করার কথা উল্লেখ রয়েছে।
গ্লাক্সোস্মিথকে ৮১৪ কোটি টাকা জরিমানা

ওষুধে ভেজাল থাকার দায়ে যুক্তরাষ্ট্রের ৪৪টি অঙ্গরাজ্য ও কলম্বিয়া জেলার ক্ষতিগ্রস্তদের প্রায় ৮১৪ কোটি ৩৯ লাখ ৭৭ হাজার টাকা (প্রায় সাড়ে ১০ কোটি মার্কিন ডলার) জরিমানা দিচ্ছে যুক্তরাজ্যভিত্তিক ফার্মাসিউটিক্যাল জায়ান্ট গ্লাক্সোস্মিথক্লিন (জিএসকে)।
শ্বাসরোগ নিরাময়ের ‘অ্যাডভেয়ার’ ও মানসিক বিষাদ দূরকারী ‘প্যাক্সিল’ ও ‘ওয়েলবুট্রিন’ ওষুধে ভেজালের দায়ে এ জরিমানা গুণতে হচ্ছে গ্লাক্সোস্মিথকে।
অবশ্য, ওষুধে ভেজালের এ অভিযোগে জরিমানার কথা অস্বীকার করে গ্লাক্সোস্মিথের পক্ষ থেকে দাবি করা হচ্ছে, আগেকার কিছু বিষয় মীমাংসার লক্ষ্যে একটি চুক্তি সই হয়েছে। চুক্তি অনুযায়ীই এই অর্থ পরিশোধ করা হচ্ছে।
গ্লাক্সোস্মিথের মুখপাত্র ম্যারি অ্যানে হৃন বলেন, আমাদের বর্তমান অবস্থা নিয়ে আমরা ভাবি না। সামনের দিকেই এগোচ্ছি আমরা।
অপরদিকে, ক্যালিফোর্নিয়ার অ্যাটর্নি জেনারেল কামালা হ্যারিস এক বিবৃতিতে বলেন, গৃহীত চুক্তি অনুসারে ভেজালের দায়ে বিশেষ জরিমানা দিচ্ছে গ্লাক্সোস্মিথ। এছাড়া, ভবিষ্যতে প্রতিষ্ঠানটির কোনো পণ্যে যেন ভেজাল না থাকে সে ব্যবস্থা করতেই গ্লাক্সোস্মিথকে নতুন নিয়মে আনা হয়েছে।
পাশাপাশি যুক্তরাজ্যভিত্তিক শীর্ষ ওষুধ কোম্পানিটির বিরুদ্ধে অপরাধ তদন্তও শুরু করেছে দেশটির ‘সিরিয়াস ফ্রড অফিস’।
কেমন লাগলো জানাবেন তাহলেই নতুন কিছু দিতে পারবো । ভুল হলে জানাবেন ভালো লাগলে উৎসাহ দিবেন । আমরা টিজে রা কিছু চাই না শুধু একটা ফিডব্যাক ।
NEXT পর্বে দেখা হবে আশা করি ।
Like My FB Page 4 FB Updates Plz
আমার ফেসবুক
Google +
আমাকে ফলো করুন