আমরা জানি আমাদের বাংলাদেশের গ্রামে গঞ্জে রয়েছে বেশ কিছু কুসংস্কার যা আমরা হয় বিশ্বাস না করতে চেয়েও এগুলোকে মানতে বাধ্য হয়ে থাকি আমাদের পরিবারের গুরুজনের কাছে। শুধু দেশেই নয় পৃথিবীর সব জায়গায় রয়েছে বেশ কিছু কুসংস্কার। কিন্তু সব কিছুর একটি ব্যাখ্যা আছে বৈজ্ঞানিক দৃষ্টি থেকে। তাহলে চলুন আজকে আমার শেষ পর্বে দেখি এমন কিছু কুসংস্কার যা আমরা এতদিন সত্য ভেবেছিলাম কিন্তু আসলে এগুলো শুধুই আমাদের মিথ্যা ভাবনা ছাড়া আর কিছু নয়।
রেড (Red) লাল রঙ
যেমন রক্তের রঙ তেমনি মনের ভাবাবেগ ও জীবনীশক্তি হিসেবে লাল রঙের একটা অতিপ্রাকৃতিক গুণাগুন আছে বলে সুখ্যাতি আছে এবং এটাকে বিশেষভাবে জাদুকরী ক্ষতির বিপরীতে এবং অশরীরী অশুভ শক্তির বিরুদ্ধে একটা সুরক্ষা হিসেবে মূল্য দেয়া হয়। এই কারণের জন্যই লালকে অত্যন্ত প্রয়োজনীয় শুভ রঙ হিসেবে অনুষ্ঠানাদিতে ব্যবহার করা হয়। পৃথিবীর অন্যত্রও ধর্মীয় অনুষ্ঠানসমূহ লাল রঙকে শুভ বলে গণ্য করা হয়। অনেকগুলো জাদুটোনার ক্ষেত্রে একপ্রস্থ লাল সুতা ব্যবহার করা হয়। বাতের আক্রমণ হলে সেই অঙ্গে লাল সুতা শক্ত করে বেঁধে দেয়া হয়, নাকের রক্ত বন্ধ করার জন্য ঘাড়ের ওপর পেঁচিয়ে দেয়া হয় এবং হুপিংকাশ ভালো করা হয়।
অনেকগুলো দোষত্রুটি ও মন্দের হাত থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য কুসংস্কারে এক প্রস্থ রেশমী ফিতা অথবা সুতা পরিধান করার ব্যাপক পরামর্শ প্রদান করে। এটা বিশেষ বিশেষ রোগ ভালো করার জন্যও দেয়া হয়। মাথার ফিতা, বিশেষ করে তা যদি হয় লাল, তাহলে পরিধানকারীর সুখ শান্তি বাড়বে এবং এমন একজন প্রেমিকের কাছ থেকে যদি ধার নেয়া হয় যার একটা ব্যবহারিক পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া আছে তার দ্বারা মাইগ্রেনের মাথাব্যথার উপশম হয়। অন্য ওষুধ প্রয়োগের স্থলে সাধারণত ফিতা অথবা সুতার টুকরা আক্রান্ত স্থানে পেঁচিয়ে রাখা হয়। অতএব গলা ফোলার স্থানে একটি ফিতা বাঁধা হলে গলাফোলা কমে যাবে। একটি মোজাবাঁধা ফিতা পায়ের ডিমের ওপর বেধে দিলে খিঁচুনি রোগ ভালো হয়ে যাবে।
রাইস (Rice) চাল
সমস্ত প্রাতিচ্যদেশব্যাপী বিবাহ অনুষ্ঠানে ভাত ফেলে দেয়ার রীতিকে এক সময়ের সামাজিক মর্যাদা হিসেবে উদাহরণ দেয়া হতো। বলা হতো এটা হচ্ছে উর্বরতার প্রতীক চিহ্ন এবং এর উপাদান দ্বারা অতিথিদের ইচ্ছা সংগঠিত হতো যে নতুন বিবাহিত দম্পতির সঠিক সময়ে যেন ছেলেমেয়ে হয়। চাল আসার পূর্বে সদ্য বিবাহিত দম্পতিকে প্রথমতো বাদামের পোটলা দেয়া হতো। এটা দেয়া হতো যখন তারা গির্জা থেকে বের হয়ে যাচ্ছে সেই সময়। বর্তমানে তার পরিবর্তে চাল দেয়ার নিয়ম ব্যাপকভাবে চালু হয়েছে।
চাল নিয়ে পৃথিবীতে অন্য যেসব কুসংস্কার রয়েছে তার মধ্যে আছে আরবী ধারণা যে প্রত্যেকটি চালের দানা হচ্ছে হযরত মুহামমদ (সাঃ)-এর ভ্রূর ঘামের ফোটা। জাপানীদের প্রথায় চালকে প্রার্থনার মাধ্যমে সমমান দেখান হয় ঈশ্বরকে প্রসন্ন করার জন্য যিনি আগামী মৌসুমের শস্য কর্তনকে নিয়ন্ত্রণ করেন।
রাইট সাইড (Right Side) ডান দিক
সাধারণত ডানদিকটা হচ্ছে শুভ দিক, যেভাবে পৃথিবীর কুসংস্কারে বাম দিকটাকে অশুভ, শয়তান ও দুর্ভাগ্যের সাথে জড়িত বলে মনে করা হয় সুতরাং ডান হচ্ছে ঈশ্বর ও সৌভাগ্যের দিক। পশুদের নিয়ে অসংখ্য কুসংস্কারে বলা হয় যে, পশুটি যদি ডানদিক দিয়ে অগ্রসর হয় তবে সৌভাগ্য নিশ্চিত। আবার প্রাণীটি বাম দিক দিয়ে এলে দুর্ভাগ্য নিয়ে আসবে। এইভাবে সূর্য হচ্ছে জীবন ও শুভ। সে আসমানে সূর্যওয়ারী দিকে চলাচল করে (অর্থাৎ ডান দিকে চলাচল করে)। বহুবিধ ধর্মীয় প্রথায় জোর দেয়া হয় যে, যখন বিছানা থেকে নামতে হবে ঘরে ঢুকতে হবে অথবা আরো অসংখ্য কাজের জন্য বাইরে বেরুতে হবে তখন অবশ্যই ডান পা প্রথমে দিয়ে শুরু করতে হবে। সাধারণত হঠাৎ করে ডানদিকে মোড় নেয়াকেও সৌভাগ্যের মনে করা হয়। কারণ এর দ্বারা উপকারী অভিভাবক আত্মার নিকট থেকে সুরক্ষা পাওয়ার সুযোগ থাকে।
সুন্দর পোস্ট ।অসাধারন পোস্ট এর গঠন।
দারুন সাজিয়েছেন টিউনটি , দেখতে খুব ভালো লাগছে