সারা দিনের কর্মব্যস্ততার কারণে আজকাল বাজারে ঢুঁ মেরে কেনাকাটা করার সময় হয়ে ওঠে না অনেকের। কাজটা যত সহজে আর দ্রুত করা যায়, সে দিকেই খেয়াল সবার। আর এই চাহিদা পূরণের জন্য রয়েছে বিভিন্ন হোম সার্ভিস প্রতিষ্ঠান, যারা ফোনে কিংবা অনলাইনে ফরমায়েশ নিয়ে গ্রাহকের দোরগোড়ায় পণ্য পৌঁছে দেয়। আবার কেউ কোনো পণ্য বিক্রি করতে চাইলে সেক্ষেত্রেও এসব প্রতিষ্ঠান সহায়তা করে থাকে। বিনিময়ে তারা কমিশন নেয়। নগরজীবনে ক্রমাগত ব্যস্ততা বাড়তে থাকায় হোম সার্ভিস প্রতিষ্ঠানের সংখ্যাও বেড়ে চলছে। তাই এখন ঢাকা, রাজশাহী কিংবা চট্টগ্রামের মতো বিভাগীয় শহর ছাপিয়ে দেশের অন্যান্য বড় শহরগুলোতেও হোম সার্ভিস ব্যবসা জায়গা করে নিচ্ছে। তবে হোম সার্ভিস মানেই অনলাইননির্ভর হতে হবে, তা নয়। পোস্টার কিংবা বিজ্ঞাপনে প্রচারণা চালিয়েও অনায়াসে এ ব্যবসা শুরু করা যায়। একটু ব্যতিক্রমী ক্যারিয়ার গঠন করত চাইলে এমন প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলতে পারেন আপনিও।
হোম সার্ভিস
শুরুটা যেভাবে
আরেক বন্ধু হাসানুর আমিনের সঙ্গে আলাপের পর তিনজন মিলে ২০০৯ সালে ‘মাই ফেরিওয়ালা’ নামে একটি প্রতিষ্ঠান খুলে বসেন। বিভিন্ন ধরনের গিফট বা উপহারসামগ্রী নিয়েই প্রতিষ্ঠানটির যাত্রা শুরু। ওই বছরের ভালোবাসা দিবসে (১৪ ফেব্রুয়ারি) একসঙ্গে অনেক ফরমায়েশ পান তাঁরা। তাতেই তাঁদের আত্মবিশ্বাসের পারদ ওপরে উঠে যায়। প্রতিষ্ঠানটির বিক্রয় ও বিপণনপ্রধান মুহিউদ্দিন সৈকত এই ব্যবসা সম্পর্কে বলেন, প্রথমেই আপনাকে ঠিক করতে হবে কোন ধরনের পণ্য বা সেবা দেবে আপনার প্রতিষ্ঠান। হতে পারে তা ইলেকট্রিক বা বৈদ্যুতিক পণ্য, গিফট বা উপহার, শাকসবজি, মনোহারি পণ্য, গ্যাস-বিদ্যুৎসহ বিভিন্ন উপযোগ সেবার বিল সংগ্রহ ও পরিশোধ, মাছ-মাংস সরবরাহ, আসবাব ইত্যাদি। আপনি যদি গিফটসামগ্রীর হোম সার্ভিস প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলতে চান, তবে সেসব পণ্যের ছবি তুলে তার মূল্য উল্লেখ করে ওয়েবসাইটে দিতে হবে। একইভাবে সেবার ক্ষেত্রে সার্ভিস চার্জ কত নেবেন, সেটিও শর্তাবলিসহ তুলে ধরতে পারেন। মুহিউদ্দিন সৈকত আরও জানান, সামাজিক যোগাযোগের জনপ্রিয় মাধ্যম ফেসবুকে প্রতিষ্ঠানের নামে পেজ খুলেও প্রচারণা চালানো যায়।
হোম সার্ভিসটি যদি ওয়েবনির্ভর না হয়, তবে কী ধরনের সেবা দেবেন, তা জানিয়ে বিজ্ঞাপন কিংবা পোস্টারিং করা যেতে পারে। এ ক্ষেত্রে পণ্য ডেলিভারি বা সরবরাহ দেওয়ার জন্য দুই থেকে তিনজন কর্মী লাগবে, যাঁদের মাসিক বেতনে কিংবা কমিশনের ভিত্তিতে রাখতে পারেন। শুরুর দিকে নিজেও এই কাজটি করা যেতে পারে।
কোনো কোনো প্রতিষ্ঠান গ্রাহকের কাছথেকে অগ্রিম টাকা নিয়ে তবেই পণ্য বা সেবা সরবরাহ করেন।আবার কেউ কেউ গ্রাহককে পণ্য-সরবরাহের পরেও টাকাটা নিয়ে থাকেন। এ ছাড়া গ্রাহকেরা এটিএম ও ভিসাসহ বিভিন্ন কার্ডের মাধ্যমেও মূল্য পরিশোধ করেন।