Ezaj Ahmed
খুজিতেছি ঠঁাই ,
আসিলাম ঘুরিতে ঘুরিতে
প্রযুকতি দুনিয়ায় ।
Latest posts by Ezaj Ahmed (see all)
- *** ইংরেজী নিয়ে ভয় আর নয় আর নয় **** ১ম পর্ব - 15/11/2012
- *** অভূতপূর্ব এক ঘড়ি **** - 14/11/2012
- **** সাপের বিষ **** - 14/11/2012
প্রায় ৬৫মিলিওন বছর পূর্বের এক সকাল বেলা, সূর্যোদয়ের সাথে সাথে ‘সেন্ট্রাল মেক্সিকো’র সমতল ভূমিতে খাদ্যের সন্ধানে জড়ো হয়েছে হাজার হাজার বিশালদেহী অ্যালামোসোরাস(Alamosaurus) । এদিকে আমেরিকার উত্তর-পশ্চিম প্রশান্ত উপকূলে ক্ষুধার্ত টি-রেক্স বের হয়েছে খাদ্যের সন্ধানে, এই সুযোগে বিশাল ডানা মেলে ‘ক্যাটজালকোআল্টাস’(Quetzalcoatlus) তার বাসায় হানা দিয়ে ছোট ছোট টি-রেক্সের ছানাগুলো গপাগপ গিলে খাচ্ছে। এখান হতে ১২০০০কিমি দূরে মঙ্গোলিয়া’র ছোট ছোট পানির উৎসগুলোর চারপাশে ঘুরে বেড়াচ্ছে নানা জাতের উদ্ভিদভোজী ডাইনোসর, কেউ দল হতে আলাদা হয়ে পড়লেই তার উপর একসাথে ঝাঁপিয়ে পড়ছে মাংসাশী ছোট ছোট অর্ণিথইডিসে’র(ornithoides) পাল।
টি-রেক্সের ছানা ধরে খাওয়া ক্যাটজালকোআল্টাস
এভাবেই শুরু হতো ডাইনোসরের বিবর্তনের শেষ পর্ব ক্রিটেসিয়াস(Cretaceous) যুগের একটি অতি সাধারণ সকাল। কিন্তু সাধারণ এই দিনটি আর কিছুক্ষণ পরে মোটেই সাধারণ রইলো না। একটি ঘটনায় পৃথিবীর ইতিহাসে প্রাণের বিকাশের ধারা সম্পূর্ণ পাল্টে গেল, ডাইনোসরদের শত কোটি বছরের আধিপত্য ধ্বংস হয়ে গেল নিমিষে, অনিশ্চিত হয়ে পড়ল পৃথিবীর বুকে প্রাণের অস্তিত্ব। তো কি হয়েছিল সেই দিনটিতে? আসুন জেনে নেই এই পোষ্টে।
এগুলোর মাঝে ১০কিমি পরিধি এবং ২৪কিমি লম্বা একটি পিণ্ড ইতস্তত এদিক সেদিক ঘুরে আরও ১০০মিলিওন বছর পরে একটি সুনির্দিষ্ট পথে যাত্রা শুরু করল, যার গন্তব্য সৌরজগতের পঞ্চম বৃহত্তম গ্রহ ও প্রাণের একমাত্র আবাসস্থল আমাদের এই পৃথিবী।
এই ভয়ঙ্কর বিপদের মুখে পৃথিবী সম্পূর্ণ একা ছিল, তা কিন্তু নয়। পৃথিবী হতে ৪০০,০০০ কিমি উপরে অবস্থিত চাঁদ পূর্বে পৃথিবীর এমন অনেক বিপদ নিজের বুকে বরণ করে নিয়েছে। সেইদিনও চাঁদ পৃথিবীকে ছেড়ে চলে যায়নি; কিন্তু দুর্ভাগ্যজনকভাবে সঠিক সময়ে, সঠিক জায়গায় উপস্থিত হতে পারেনি।
কোন বাঁধা ছাড়াই ২ট্রিলিয়ন টন ওজনের পাথরখণ্ডটি ঢুকে পড়ল পৃথিবীর মধ্যাকর্ষণ বলয়ের পরিসীমায়, মধ্যাকর্ষণের প্রভাবে এর গতি বৃদ্ধি পেয়ে দাঁড়াল ৪৫,০০০কিমি/ঘণ্টায়। ভর এবং গতি এক হয়ে প্রচণ্ড বল নিয়ে এগিয়ে চলল পৃথিবীর বুকে আঘাত হানতে।
বায়ুমণ্ডলের সাথে ঘর্ষণের ফলে এটি পরিণত হোল জ্বলন্ত অগ্নিপিণ্ডে, ফলে এর তাপমাত্রা বেড়ে গিয়ে দাঁড়াল ৩৫,০০০ডিগ্রি সে. এ এবং জ্বলতে লাগল সহস্র সূর্যের সমান উজ্জ্বলতা নিয়ে। পৃথিবীর সাথে ৩০ডিগ্রি কোণ করে উত্তর পশ্চিম বরাবর ১০০মিলিওন মেগাটন শক্তি নিয়ে আছড়ে পড়ল মেক্সিকো উপসাগরের অগভীর বুকে। মুহূর্তের মাঝেই সাগরের পানি বাষ্প হয়ে মিলিয়ে গেল এবং হাজার মাইল বেগে গ্রহাণু ও ভূপৃষ্ঠের অংশ খণ্ড বিখন্ড হয়ে শূন্যের দিকে উড়ে গেল; যার কোন কোনটির আয়তন ছিল একটি বড় দালানের সমান।
আঘাতস্থলের ৫০০মাইল দূরে যেখানে বিশালাকৃতির অ্যালামোসরাসের পাল চড়ে বেড়াচ্ছিল কয়েক সেকেন্ডের মাঝেই সেখানে বাতাসের তাপমাত্রা গিয়ে পৌঁছাল ৬০০ডিগ্রি সে. এ। উন্মুক্ত স্থানে থাকা হাজার হাজার ডাইনোসর এবং অন্যান্য প্রাণী জ্বলে পুড়ে কয়লায় পরিণত হোল; গাছগুলোর প্রতিটি কোষের পানি শুকিয়ে গেল সেই প্রচণ্ড তাপে।
১মিনিট ৪০সেকেন্ডের মাথায় এই সংঘর্ষের উজ্জ্বলতা পৌঁছে গেল ৩০০০মাইল দূরে প্রশান্তের উপকূলে উঁচু পাহাড়ের উপর বাসা বাঁধা ক্যাটজালকোআল্টাস’দের চোখে।
এদিকে বড় পাহাড়ের আড়ালে থাকা অসংখ্য অ্যালামোসোরাস রক্ষা পেল সেই ভয়ঙ্কর তাপের হাত থেকে, কিন্তু তাতে এদের শেষ রক্ষা হোল না। আরও তিনটি বড় বড় আক্রমণ একে একে ধেয়ে এল তাদের দিকে।
–প্রথমেই যেই বড় বড় পাথর খণ্ড গুলো শূন্যে উড়ে গিয়েছিল সেগুলোই উপর থেকে নেমে এল ভয়ঙ্কর বেগ নিয়ে, প্রচণ্ড আঘাতে লুটিয়ে পড়ল প্রায় ৩০টন ওজনের দানব অ্যালামোসোরাস।
–দ্বিতীয় আঘাতটি এল মাটির নিচ হতে, রিখটার স্কেলে ১১.১ মাত্রার শক্তিশালী ভুমিকম্পে আবারো ব্যাপকহারে মারা পড়ল তারা।
–তৃতীয় এবং শেষ আঘাতটি এল শক ওয়েভের সাথে, সব ডাইনোসরকে মাটির সাথে মিশিয়ে দিয়ে শব্দের চেয়েও দ্রুতবেগে কেন্দ্রের চারদিকে বৃত্তাকারে অগ্রসর হতে লাগল এটি।
মাত্র ৫মিনিটের ব্যবধানে এই তিনটি ধাক্কায় অত্র অঞ্চলের অ্যালামোসোরাসসহ অন্যান্য ডাইনোসর প্রজাতি একেবারেই বিলুপ্ত হয়ে গেল।
ঘটনার ৭মিনিটের মাথায় প্রায় ১০০মাইল উঁচু একটি অগ্নি বলয়ের সৃষ্টি হোল সংঘর্ষস্থলে এবং সাথে ৭০বিলিওন টন পাথর, কাঁচ আর চার্জিত কণা নিয়ে সৃষ্টি হোল ‘এজেক্টা মেঘের’। বাতাসের সাথে এইসব কণার ঘর্ষণের ফলে মেঘের তাপমাত্রা গিয়ে পৌঁছাল ১৫,০০০ ডিগ্রি সে. এ।
১৬মিনিট ১৪সেকেন্ডের মাথায় ১১.১ মাত্রার ভূমিকম্পটি আঘাত হানল ৩,০০০ কিমি দূরে আমেরিকার উত্তর পশ্চিমে টি-রেক্স, ট্রাইসেরাটপস ও অন্যান্য বিশাল ডাইনোসরদের আবাসস্থলে। বেশ কিছু মারা পড়ল, বাকিগুলো বাঁচার উদ্দেশ্যে সামনে অগ্রসর হতে থাকল। কিন্তু কিছুদূর যেতেই ১৫,০০০ডিগ্রি সে. তাপমাত্রার ‘এজেক্টা মেঘ’ এসে ঢেকে ফেলল তাদের, পুড়ে ছাই হয়ে গেল অসংখ্য ডাইনোসর। এদিকে ডানা মেলে পালিয়ে যাবার সময় উপর হতে বৃষ্টির মত আগুন, পাথর বর্ষণে ক্যাটজালকোআল্টাসরা ডানা পুড়ে একে একে মারা পড়তে থাকল। খুবই অল্পসংখ্যক যেগুলো বেঁচে গেল, গিয়ে দূরের দ্বীপে আশ্রয় নিল।
এজেক্টা মেঘের প্রকোপ তখনো শেষ হয়নি। পৃথিবীর বুকে আঘাত আসার ৯০মিনিট পরে প্রশান্ত মহাসাগর পাড়ি দিয়ে এজেক্টা মেঘ উপস্থিত হোল ১২,০০০কিমি দূরে অবস্থিত ডাইনোসরদের আরেক বিশাল আবাসস্থল মঙ্গোলিয়া’তে। সেকেন্ডের সাথে পাল্লা দিয়ে তাপমাত্রা বাড়তে লাগল। অবশেষে সর্বোচ্চ ৩০০ডিগ্রি’তে পৌঁছে বিদায় নিল ‘এজেক্টা মেঘ’ কিন্তু যাওয়ার আগে মৃত্যু উপহার দিয়ে গেল ঐ অঞ্চলের অধিকাংশ ডাইনোসরকে।
এদিকে আঘাত হানার পর ২ঘণ্টা পেরিয়ে গেছে কিন্তু আমেরিকার উত্তর-পশ্চিমে মৃত্যুর প্রলয়-নাচন তখনো বন্ধ হয়নি। জঙ্গলের কোন কোন স্থানে তখনো কিছু ডাইনোসর নিরাপদ ছিল। কিন্তু ক্রমাগত উচ্চ তাপমাত্রার কারণে বিশাল অঞ্চলে বাতাসের চাপ একেবারে কমে গেল, এরই মাঝে আগুনের উপস্থিতি শুরু করল আরেক ভয়ঙ্কর বিপদ; প্রবল বেগে আগুন ধেয়ে আসতে লাগল। ছোট প্রাণীরা গর্তে ঢুকে আশ্রয় নিল আর ডাইনোসরেরা ছুটতে লাগল আগুনের আগে আগে। কিন্তু ঘণ্টার পর ঘণ্টা তো আর পাল্লা দিয়ে ছুটা সম্ভব নয়, মাত্র হাতে গোণা অল্পকিছুই পারল আগুনের গতি জয় করে নিরাপদ আশ্রয়ে বেরিয়ে আসতে।
চারিদিকে শুধুই ধ্বংস আর মৃত্যুর চিহ্ন, কোথাও একটু সবুজের চিহ্ন নেই। খাদ্যের সন্ধানে ট্রাইসেরাটপস ও অন্যান্য তৃণভোজী পাড়ি জমাল প্রশান্ত মহাসাগরের উপকূলের দিকে, লক্ষ্য তাপ ও আগুনের হাত থেকে বেঁচে যাওয়া কোন সবুজ স্থান খুঁজে বের করা। পড়ে থাকা মৃতদেহ খাদ্যের যোগান দিল বেঁচে যাওয়া অল্প কিছু টি-রেক্সের, কিন্তু একসময় তারাও পিছু নিতে বাধ্য হোল তৃণভোজীদের।
তীরে গিয়ে দেখল, উল্কার আঘাতের ফলে কোনকারণে পানি সরে গিয়ে দূরের দ্বীপের সাথে মূলভূখণ্ড এক হয়ে গেছে। হেঁটে গিয়ে সেই সবুজ দ্বীপে আশ্রয় নিল, অসংখ্য ক্যাটজালকোআল্টাসও আশ্রয় নিল তাদের সাথে। কিন্তু নিরাপদ বলতে কোনকিছু আর ডাইনোসরদের নিয়তিতে ছিলনা, এক সপ্তাহের মাথায় সমুদ্রের তলদেশের একস্থান অনেকখানি দেবে গেল; পরিণামে ৩০০ফুট উঁচু হয়ে ভয়ঙ্কর সুনামি ধেয়ে এল। দ্বীপ এবং তীরে আশ্রয় নেওয়া সব ডাইনোসর ধুয়ে মুছে সাগরের পানির সাথে ভেসে গেল।
উল্কাপিণ্ডের আঘাতের দ্বারা সৃষ্ট শক্তির মাত্র ১শতাংশ গিয়ে পৌঁছাল পৃথিবীর অভ্যন্তরে, কিন্তু এতেও যেন পৃথিবীর সমস্ত নিয়ন্ত্রণ ভেঙ্গে পড়ল। একের পর এক আগ্নেয়গিরির বিস্ফোরণে বাতাস হয়ে উঠল বিষাক্ত। ভয়ঙ্কর মরু ঝড়ে মঙ্গোলিয়ার অবশিষ্ট ডাইনোসররাও মারা পড়ল। পানির সাথে বুদবুদ আকারে উঠতে লাগল বিষাক্ত হাইড্রোজেন সালফাইড গ্যাস, ফলে পান করার মত পানিও আর থাকলো না।
যেই গুটিকয়েক ডাইনোসর দুনিয়ার বুকে ছড়িয়ে ছিটিয়ে ছিল খাদ্যাভাবে, নিজেদের মাঝে মারামারি করে একসময় সেগুলোও মারা পড়ল; নতুন প্রজন্ম সৃষ্টি করতে না পারার কারণে কিছু দিনের মাঝেই পৃথিবীর বুকে শেষ ডাইনোসরটিও আর রইলো না। যবানিকা ঘটল পৃথিবীর বুকে তাদের প্রায় সাড়ে ৩০০কোটি বছরের সগর্ব বিচরন।
কিন্তু এরকম বিশাল দুর্যোগের পরেও কিন্তু পৃথিবীর বুকে প্রাণের অস্তিত্ব বিলীন হয়ে যায়নি। অসংখ্য ছোট ছোট প্রাণী, পোকামাকড় বেঁচে রইল। এরই মাঝে ছিল মাত্র একদিনেই বংশ বিস্তারে সক্ষম মারসুপিয়ালস(marsupials) জাতীয় কিছু স্তন্যপায়ী প্রাণী, যাদের বিবর্তনের মাঝে দিয়েই পরবর্তীতে গড়ে উঠেছে এই বিশাল বৈচিত্র্যময় জীব-বিন্যাস।
মারসুপিয়ালস
miya aita to apnar lekha na.chapabaji kom koren.bujhlen.lojja shorom nai ?lekha churi koren.chor kothakar.http://www.somewhereinblog.net/blog/sakib2509/29591797 aita asol lekhar link.jeita may mase lekha.
posti pore moja pailam
অসাধারন পোস্ট।ধন্য চালিয়ে যান
চরম পোস্ট।
অনেক ধন্যবাদ সুন্দর পোষ্ট টির জন্য।
শুধু ধন্যবাদ দিলে হয়বো না জানি|তারপরও এ অদমের পক্ষ থেকে অসংখ্য ধন্যবাদ|
এক্কে বারে ১ কথায় অসাধারন :)
খুব ভালো লাগলো আপনার পোস্ট টি পড়ে, ধন্যবাদ.
সরাসরি প্রিয়তে! দারুন হলো বস.
গ্যান ভান্ডার টা সমৃদ্ধ হলো
আপনাকে খুউউব ধন্যবাদ
মনে হয় অনেক কস্ট হয়েছে । অনেক কিছু জানা হল ।
ভাই আপনাকে কি যে বলব !!!! AwesomE হইছে.চে। :-) :-) :-) :-) :-) :-)
চরম জিনিস ধন্যবাদ ভাইয়া
সুন্দর টিউন ভাই। থ্যাংকস।
অনেক কিছু জানলাম
ওনেক ধন্যবাদ। ওনেক কিছু জানা গেলো
1k kothai chorom.. . . . . . Tobe ami Biborton bad bissas kori na.
অসাধারণ টিউন …………………………….. :) :) :)
ধন্যবাদ ।
ভাইরে আপ্নারে কি কমু তার ভাসা আমার নাই ।। যদি কই সেয়ার করার জন্য ধন্যবাদ তা ও তো কম হই ইয়স যায় ।। জাই হোক BOSSSSSSSSSSS আপনি সত্যি ই বসসসসসসসসসসসসসসস … আর ছবি গুলা দেওয়ার জন্য আরো ভালো লাগতা ছে …
ধন্যবাদ খলিফা ভাই । আপনাদের সাড়া পেলে আরও ভাল কিছু উপহার দিতে পারব ।